স্পর্শ বনিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) মঞ্চস্থ হলো নাট্যকার মন্মথ রায় রচিত 'আজব দেশ' নাটকটি।
বৃহস্পতিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ল্যাব কক্ষে নাট্যদৃশ্য নির্মাণ কোর্সের পরীক্ষা প্রযোজনা হিসেবে নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।
নাটকটি পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় ছিলেন বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক মোঃ সালজার সালেকিন। পুঁজিপতি শোষণে একটি দেশ কিভাবে অন্ধকারে ডুবে থাকে তার চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে 'আজব দেশ' এ। নাটকটিতে সমাজের বিভিন্ন অসংগতির বাস্তব চিত্র তুলে ধরে সামাজিক নাটকের সার্থক দৃশ্যায়ন হয়েছে।
এতে অভিনয় করেছেন বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক মোঃ সালজার সালেকিন, মঞ্চনির্মাণে সাঈদ আনসাড়ি ও ইকবাল মাহমুদ , আলোক পরিকল্পনায় রাজিন মোহাম্মদ বাবু ও মুহাম্মদ আল ইমরান , আলোক প্রক্ষেপণে মোঃ মাহবুব আলম, আবহ সঙ্গীত পরিকল্পনায় পলক সাহা ও মাইশা সরকার মিশু, মঞ্চ সামগ্রী পরিকল্পনায় স্পর্শ বনিক ও সীমান্ত সূত্রধর (শ্রীকান্ত)। পোশাক পরিকল্পনায় অর্থী দাশ ও প্রতিভা রানী সরকার।
মন্মথ রায়ের "আজব দেশ" একটি বিখ্যাত বাংলা নাটক, যা সমাজের বিভিন্ন দিক এবং মানবিক সম্পর্কগুলোকে ব্যঙ্গ করে উপস্থাপন করে। নাটকের কাহিনী প্রধানত একটি অদ্ভুত দেশের চারপাশে আবর্তিত, যেখানে বিভিন্ন চরিত্রের মাধ্যমে মানবজাতির দুর্বলতা, প্রবৃত্তি ও সামাজিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। নাটকটি হাস্যরসের মাধ্যমে গভীর ভাবনা এবং প্রাসঙ্গিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। নাটকটিতে দেখা যায় পুঁজিপতি সমাজের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে এক কিশোরের বিদ্রোহ। নাটকটি শুরু হয় গাজন নৃত্য ও সঙ নৃত্য দিয়ে।গাজন নৃত্য ও সঙ নৃত্য শহুরে প্রসেনিয়াম মঞ্চে উপস্থাপন করা এক ব্যাতিক্রমী চেষ্টা। নাটকটির পটভূমি রচিত হয়েছে এমন এক দেশকে কেন্দ্র করে যেখানকার রাজা হবুচন্দ্র একজন নির্বোধ ব্যক্তি। রাজ্যের নাম আজব দেশ। রাজ্যের মন্ত্রী গবুচন্দ্র অতিব চালাক ও কুটিল প্রকৃতির লোক। রাজার রথের নিচে বিড়াল আহত হয় আর সেই বিড়ালর জন্য পথ্য নির্দিষ্ট হয় রোজ এক মণ দুধ। আরো কত রকমের অদ্ভুত পরিকল্পনার কথা নাটকে ফুটে উঠে হাস্যরসাত্মক সংলাপের মাধ্যমে।এক পর্যায়ে দেখা যায় রাজাকে বিপথে চালিত করে মন্ত্রী গবুচন্দ্র রাজ্যের অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে ফেলছে এমন সময় বিদ্রোহী কিষাণচাঁদ প্রতিবাদ করে এবং বলে 'আলো চাই আরো আলো'। প্রানদন্ডের সাজা থেকে বাঁচতে রাজা হবুচন্দ্রের কন্যা রাজকুমারী জয়ন্তীর দেহরক্ষী হিসেবে কিষাণচাঁদ ছদ্মবেশে রাজপ্রাসাদেই অবস্থান করে। এক পর্যায়ে রাজকুমারীর সয়ম্বর অনুষ্ঠানে তিনটি ধাধার উত্তর দিয়ে জয় লাভ করে কিষাণচাঁদ রাজকুমারী জয়ন্তীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। রাজবিদ্রোহী কিষাণচাঁদকে শাস্তি না দিয়ে মহারাজ হবুচন্দ্র তাকে আজবদেশের রাজা ঘোষণা করে। এই খবর শুনতে পেয়ে মন্ত্রী গবুচন্দ্র পালিয়ে যায়। নাটকের বিশেষ আকর্ষণ ছিল অ্যাং, ব্যাং ও চ্যাং নামের তিনজন পন্ডিত যাদের হাস্যরসাত্মক সংলাপ বিনিময়ের মাধ্যমে দর্শক মনে প্রচুর বিনোদনের সৃষ্টি করেছে।